জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি :রাঙ্গুনিয়ায় পৌরসভা নির্বাচন প্রচারণায় আওয়ামীলীগ প্রকাশ্যে ও বিএনপি নীরবে দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যাকুল দুই দলের প্রার্থীরা,
সারাদেশের ন্যায় প্রথমবারের মতো আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দলীয় পরিচয়ে পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন থেকেই দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের। মনোনয়ন পেতে দলীয় শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের স্মরণাপন্ন হচ্ছেন নির্বাচনের প্রার্থীরা। প্রচারণা চালাচ্ছেন বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমেও। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নিজের প্রার্থীতার জানান দিচ্ছেন অনেকেই। তবে আওয়ামীলীগ প্রকাশ্যে প্রচারণা চালালেও বিএনপি প্রচারণা চালাচ্ছেন অনেকটা নিরবে। সুত্রে জানা যায়, দেশের দুই প্রধান দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপি সমর্থিত ডজন খানেক মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম শুনা যাচ্ছে আসন্ন রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা নির্বাচনে। স্থানীয় এমপি ও দলীয় সিনিয়র নেতাদের কাছে নিজের অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করছেন তাদের কেউ কেউ। তবে দলীয় সিনিয়ন নেতৃবৃন্দরা জানিয়েছেন, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্থানীয় এমপি এবং দলের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের মতামত-ই প্রাধান্য থাকবে। ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ সারাদেশে শুরুহবে নির্বাচন। পৌরসভা নির্বচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে ১৪ জন প্রাথীর নাম শোনা যাচ্ছে। এদের মধ্যে বর্তমান পৌর মেয়র খলিলুর রহমান চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে বেশ আশাবাধী। তিনি জানিয়েছেন, দল তাকে মনোনয়ন দিক আর না দিক তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন। তবে দলের সম্ভাব্য অপরাপর প্রার্থীরাও দলীয় মনোনয়ন পেতে কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। তারাও দলীয় মনোনয়ন পেতে দৃঢ় আশাবাদী। তাই দলীয় মনোনয়ন পাবার ক্ষেত্রে সমান তালে এগোচ্ছেন চট্টগ্রাম উত্তরজেলা আওয়ামীলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শাহজাহান সিকদার, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক কামরুল ইসলাম এবং পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাষ্টার আসলাম খাঁন। এছাড়াও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন খাঁন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খাইরুল বশর মুন্সি, সাবেক যুবলীগ নেতা মাহবুব আলম ও পৌর আওয়ামীলীগ নেতা ইমাম উদ্দিন খোকন নিজেদের প্রার্থী হিসেবে দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় ভাবে ঘোষণা করা হয়েছে বিএনপি এবার পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেবে। তাই সাংগঠনিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়া বিএনপিও পিছিয়ে নেই দলীয় মনোনয়ন পেতে। রাঙ্গুনিয়ার বিএনপি অঙ্গনে রাউজানের চৌধুরী পরিবারের প্রভাব পূর্বের মতো না থাকলেও এই পরিবারের সাথে স্থানীয় একটি গ্রুপের প্রার্থীর মধ্যে রয়েছে বেশ টানাপোড়েন। তাই চৌধুরী পরিবারের প্রার্থীদের বাইরেও অনেক প্রার্থীদের নাম বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যাচ্ছে। এবার বিএনপি থেকে সাবেক পৌর মেয়র নুরুল আমিন তালুকদার, পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মাহাবুব ছাফা, যুগ্ন আহবায়ক ও পৌর কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন শাহ, পৌর কাউন্সিলর আবদুস ছামাদ খাঁন, পৌরসভার বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক আবদুস সালাম ও পৌর বিএনপি নেতা বাদশা আলম সওদাগর দলীয় ফোরামে মনোনয়ন পেতে চাইবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও কমিউনিস্ট পার্টির প্রমোদ বরণ বড়ুয়া, ইসলামী ফ্রন্ট নেতা ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আকতার হোসেন, জাতীয় পার্টি নেতা ও সাবেক এম.পি নজরুল ইসলাম তাদের স্ব স্ব দল থেকে প্রার্থী দেবেন বলে জানিয়েছেন।
পৌরসভা পরিচিতি: ১৯৯৭ সালে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক ও রাঙ্গুনিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন সময়ে মাষ্টার আসলাম খাঁন রাঙ্গুনিয়াকে পৌরসভায় উন্নিত করার জন্য প্রস্তাব করেন। তৎকালীন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী প্রয়াত জিল্লুর রহমান কাছে আবেদন পত্রও জমা দেন। পরবর্তীতে ২০০০ সালে মরহুম নেতা ছাদেক চৌধুরীর একান্ত প্রচেষ্টায় তৎকলীন আওয়ামীলীগ সরকার উপজেলার পারুয়া, পোমরা, স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, ও মরিয়মনগর ইউনিয়নের ৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে রাঙ্গুনিয়াকে তৃতীয় শ্রেণির পৌরসভায় উত্তীর্ণ করেন। ২০০০ সালের ২৫ জুলাই থেকে তৎকালীন ইউএনও মো.তসলিমুল ইসলাম, মো. শাহ আলম খান, আওয়ামীলীগ নেতা খলিলুর চৌধুরী ও ওমর ফারুক ২০০২ সালের ৪ এপ্রিল পর্যন্ত পরপর প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। রাঙ্গুনিয়ার পৌরসভার প্রথম নির্বাচন হয় ২০০২ সালে। তখন বিএনপি থেকে নির্বাচিত প্রার্থী নুরুল আমিন তালুকদার মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১০ সালের ১৮ জানুয়ারী সর্বশেষ নির্বাচনে তার মনোনয়ন বাতিল হওয়ার কারণে দলীয় অপর প্রার্থী মরহুম ইঞ্জিনিয়ার এমদাদুল ইসলাম বর্তমান মেয়রের সাথে প্রতিদ্বন্দিতা করে ২৭৫ ভোটে পরাজিত হন।